শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ::
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফেঅবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির গুলোকে ঘিরেই চলছে অবাধে মাদক ব্যবসা। প্রতিদিন আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হচ্ছে ইয়াবা সহ রোহিঙ্গা। নতুন পুরাতন রোহিঙ্গারা নানান অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এদের কারণে এখানকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নির্যাতন বন্ধ না হলেও বাংলাদেশে প্রতিদিন ঢুকছে লাখ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট। সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক কড়াকড়ির কারণে নৌ-পথে আসা রোহিঙ্গারা ইয়াবা বহন করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
স্থানীয় এলাকাবাসী বলছেন সীমান্ত এলাকায় নানান অপরাধের সাথে জড়িত রোহিঙ্গারা। ইয়াবা কারবারীরা কম টাকায় তাদের ব্যবহার করছেন। তবে শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীরা সবসময় ধরাছোয়ার বাহিরে থেকে যায়। উখিয়া-টেকনাফের ১২ টি পয়েন্ট দিয়ে আসছে ইয়াবা ট্যাবলেট। শরণার্থী ক্যাম্পে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করার কারণে এখানকার ইয়াবা কারবারীদের সাথে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ সুবাধে রোহিঙ্গাদের অভাবের সুযোগ নিয়ে ইয়াবা বহনের কাজে লাগাচ্ছে। বহনকারী রোহিঙ্গারা কখনো মূলহোতার না বলতে পারেনা।
এদেশে পালিয়ে আসার সময় কোন রোহিঙ্গাদের তল্লাশী করছেনা কোন আইন শৃংখলা বাহিনী। এ সুবাধে ঢুকছে ইয়াবা, ফেন্সিডিল সহ অন্যান্য মাদক দ্রব্য। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা। গত ২৫ আগষ্ট থেকে মিয়ানমার থেকে রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ঢল নামে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে। সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের জন্য বড় উদ্বিগ্নের কারণ হচ্ছে এত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মাদক ও অস্ত্রের চালান আসতে পারে। যা বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি কারণও হতে পারে।
জানা গেছে, ১২ টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এদেশে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিশেষ করে ইয়াবা ও অস্ত্র। এসব পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন আসছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। পয়েন্ট সমূহ উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী, রহমতের বিল, উত্তর রহমতের বিল, ধামনখালী, আঞ্জুমান পাড়া, ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্র“, মাঝের পাড়া, ঘুমধুম, জলপাইতলী, বাইশপারী, রাজাপালং ইউনিয়নের, রেজু আমতলী, ডেইল পাড়া, করইবনিয়া। এসব পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবা ও রোহিঙ্গা আসছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর র্যাব-৭ ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে টেকনাফের শাহপূরীর দ্বীপ গভীর সমুদ্রে একটি মাছ ধরার ট্রলারে অভিযান চালিয়ে ৮ লাখ ইয়াবা সহ ৪ জনকে আটক করে। তৎমধ্যে ৩ জনই মিয়ানমারের নাগরিক।এরা মিয়ানমারের মংডু হাশ্চরাতা গ্রামের আবুল বছরের ছেলে হাফিজুল্লাহ (২৪), বুচিদং কিতার বিল গ্রামের মৃত নজু মিয়ার ছেলে মোঃ জামিল (২৪) ও মংডু নারিয়ার বিল গ্রামের মৃত হোছন আলীর ছেলে বদিউল আলম (৪৫)।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর টেকনাফের বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা নাফ নদীর কিনারে অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার ৯ শ ২৫ পিস ইয়াবা সহ ৩ মিয়ানমার নাগরিককে আটক করেছে। আটককৃতরা হল মিয়ানমারের মংডু আশকি পাড়ার ইউছুপ আলীর ছেলে মোঃ ফয়সাল (২০), নাপিতের ডেইল গ্রামের ফয়েজ আহমদের ছেলে মোঃ আলী (২০) ও রশিদ আহমদের ছেলে আবদুল নবী। মরিচ্যা যৌথ চেকপোষ্টের সুবেদার নজরুল ইসলাম বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে প্রতিদিন অভিযান চলছে। গত ১ দিন আগে ইয়াবা সহ ১ রোহিঙ্গারা নারীকে আটক করি। র্যাব- ৭ এর কোম্পানী কমান্ডার রুহুল আমিন বলেন, ইয়াবা সহ সব ধরনের মাদক জব্দ করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উখিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। কোন অবস্থাতেই মাদক ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
পাঠকের মতামত: